প্রকাশিত: Sun, Jan 15, 2023 2:38 PM
আপডেট: Fri, Jun 13, 2025 3:39 AM

মূর্খরা সর্বত্র ‘প্রধান অতিথি’ হওয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে!

রউফুল আলম

জার্মানরা কয়েশ বছর ধরে জ্ঞান-গবেষণায় ভালো। আবিষ্কার-উদ্ভাবনে সেরা। কেন সেরা? কারণ তারা মেন্টর তৈরি করছে। মেন্টর তৈরির চেইন সংস্কৃতি ওদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আপনি ফিজিক্সের ইতিহাস পড়েন, দেখবেন জার্মান বিজ্ঞানীতে ভরা। ম্যাক্স প্ল্যাংক, আলবার্ট আইনস্টাইন, সমারফেল্ড, হাইজেনবার্গ, ভিলহ্যাম রন্টজেন, ক্লাউজিয়াস। কাকে বাদ দিয়ে কার কথা বলবো। তারা নিজেরা বড়ো বড়ো ফিজিসিস্টদের হাত দিয়ে এসেছেন। 

আবার তাদের হাত দিয়ে গড়ে উঠেছে বহু সায়েন্টিস্ট। এক সমারফেল্ডের হাত দিয়েই বেরিয়েছে বহু নোবেল বিজয়ী। আপনি যদি কেমেস্ট্রির ইতিহাস পড়েন, সেখানেও জার্মান বিজ্ঞানীতে ভরা। একসময় আমেরিকান কেমিস্টরা জার্মান ভাষা শিখতো। জার্মান জার্নালগুলো পড়ার জন্য। আপনি যদি ম্যাথমেটিক্স, বায়োলজি কিংবা অন্যান্য ফিল্ড সম্পর্কেও পড়েন, দেখবেন জার্মান সাইন্টিস্টদের জয়জয়কার। ওদের সমাজে, মেন্টরের হাত ধরে মেন্টর তৈরি হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে সেটা চলছে। সেজন্যই ওরা যুগ যুগ ধরে সেরা। পৃথিবীর ইতিহাসে একজন নোবেল বিজয়ী খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে, যার মেন্টররা ছিলেন দুর্বল। সায়েন্টিফিক এরিয়াতে এটা আরও সত্য যে একজন গ্রেইট মেন্টর আরেকজন গ্রেইট মেন্টরকে জন্ম দেয়। জার্মানরা কি করে জ্ঞান-বিজ্ঞানে এতো শক্তিশালী হলো সেটা নিয়ে ভাবতে শুরু করলো জাপান। ইম্পেরিয়াল জাপান উনিশ শতকের শেষে, জার্মানদের মতো করে তাদের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাকে সাজাতে লাগলো। জাপানে গড়ে তোলা হলো বিশ্বমানের গবেষণা কেন্দ্ররাইকেন। তাদের দেশে তৈরি হলো ধারাবাহিক মেন্টর তৈরির সংস্কৃতি। জ্ঞান-গবেষণার ইতিহাসে মেন্টর তৈরি করার এই যে ধারাবাহিক সংস্কৃতি, এটা আবশ্যক। প্রজন্মের পর প্রজন্মকে যেন সর্বাধুনিক জ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পারে, ভবিষ্যতের কালকে দেখিয়ে দিতে পারে সেজন্য মেন্টর, সুপারভাইজর, শিক্ষক তৈরির ধারাবাহিক সংস্কৃতি লাগবেই। এ সংস্কৃতি যে সমাজে নেই, সে সমাজে আগাছা বেড়েছে অনেক। সেখানে ক্ষুরধার জ্ঞান নেই। মানুষের চিন্তা ও চেতনায় পড়েছে ঝং। তাদের উপলব্ধি করার ক্ষমতা গেছে ক্ষয়ে। মূর্খরা সর্বত্র ‘প্রধান অতিথি’ হওয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। ফেসবুক থেকে